ঢাকা , শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫ , ২০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র জারি করতে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ৩১-১২-২০২৪ ০৮:৪১:৫৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০১-০১-২০২৫ ১১:০৫:১১ পূর্বাহ্ন
​জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র জারি করতে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম ​সংবাদচিত্র : ফোকাস বাংলা নিউজ
‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ জারি করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র জারির দাবি জানায়। একইসঙ্গে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রীসভা এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবিও জানানো হয়। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী এই প্ল্যাটফর্মের ডাকা মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচিতে এসব দাবি জানানো হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘ছাত্র-জনতার দাবির মুখে অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র জারির উদ্যোগ নিয়েছে। এটি আমাদের বিজয়। এই ঘোষণাপত্রে একাত্তর, নব্বই এবং চব্বিশের মানুষের গণআকাঙ্ক্ষা থাকতে হবে। সরকারকে হুঁশিয়ার করতে চাই, অতিদ্রুত ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপে সক্রিয় হোন।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘এতদিন আমাদের কোনও ঘোষণাপত্র ছিল না। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে। মুজিববাদীদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই সংগ্রাম জারি থাকবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘আমরা রীতিমতো বাধ্য হয়ে এখানে উপস্থিত হয়েছি। আগস্টের পাঁচ মাস পর এই ঘোষণাপত্রের উদ্যোগ নিতে হলো। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিতের আগে কোনও নির্বাচন হবে না।’ জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পাঁচ মাস পরও কেউ জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের উদ্যোগ নেয় নাই। তাদের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এটি ঘোষণা করতে হবে।’

নতুন সংবিধান প্রণয়নে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা চায়। নতুন সংবিধান চায়। নতুন সংবিধান বাংলাদেশের মানুষের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই হবে। আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘আমরা অভ্যুত্থানে ঘোষণা দিয়েছিলাম নতুন বন্দোবস্তের জন্য। এই জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন ঘোষণাপত্র।’

গোপালগঞ্জে মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচি অংশ নিতে আসা বাসে হামলার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, যেসব খুনিরা বিদেশে পালিয়ে গেছে তাদের ফেরত আনতে হবে, তাদের পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে হবে। গোপালগঞ্জে লুকিয়ে থাকা তাদের দোসরদের গ্রেফতার করতে হবে।’

কর্মসূচিতে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান, পুলিশের গুলিতে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ, আতিকুল গাজীসহ নিহত পরিবারের সদস্য এবং আহতরা। ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের পক্ষে বক্তব্য দিয়ে মীর মুগ্ধের বাবা অভ্যুত্থানে নিহত ও আহত সবাইকে ‘বিপ্লবী যোদ্ধা’ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান। আরও বক্তব্য রাখেন– বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম, খান তালাত মাহমুদ রাফি, রিফাত রশীদ, মাহিন সরকার, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক শ্যামলী সুলতানা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
 
এর আগে, রোববার (২৯ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশের মাধ্যমে পাঠ করার ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ঘোষণাপত্রকে নতুন সংবিধান হিসেবে অভিহিত না করলেও এটিই যে বাহাত্তরের সংবিধান রিপ্লেসের প্রক্রিয়া, সে বিষয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছিলেন আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তবে এ ঘোষণা নিয়ে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের মধ্যে নানা দ্বিমত দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরির ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে কর্মসূচি পরিবর্তন করে ঘোষণাপত্রের পক্ষে মার্চ ফর ইউনিটি (ঐক্যের জন্য যাত্রা) কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ